নিজ ভূমে পরবাসী : ১৩ জন পরিযায়ী শ্রমিকের ঠাঁই জঙ্গল লাগোয়া ফাঁকা জায়গায়

19th July 2020 4:42 pm বাঁকুড়া
নিজ ভূমে পরবাসী : ১৩ জন পরিযায়ী শ্রমিকের ঠাঁই জঙ্গল লাগোয়া ফাঁকা জায়গায়


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) :  করোনাময় পরিস্থিতিতে দু'দু'ফায় বাড়ি ফিরেও 'নিজভূমে পরবাসী' ওরা। 'ওরা' মানে সদ্য রাজস্থান ফেরৎ বাঁকুড়া-১ ব্লকের জগদ্দলা গ্রামের সদ্য রাজস্থান ফেরৎ ১৩ জন পরিযায়ী শ্রমিক। গ্রামের একাংশের আপত্তিতে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে জায়গা হয়নি। কারোরই বাড়িতে আগামী ১৪ দিন 'আলাদা' থাকার মতো পরিকাঠামো নেই। ফলে গ্রাম থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে জঙ্গল লাগোয়া ফাঁকা জায়গায় আলো, পানীয় জলের ব্যবস্থা ছাড়াই অস্থায়ী ছাঁওনীর নিচে দিন কাটছে তাদের। সেখানেও পদে পদে বিপদ। এই মুহূর্তে ঐ বিষধর চন্দ্রবোড়ার সাপের উৎপাত সঙ্গে জংলী পোকা ও কাঁকড়া বিছের সদর্প উপস্থিতি তো রয়েইছে। তবুও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সময় কাটছে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের এই ১৩ সদস্যের।

   এই মুহূর্তে জঙ্গলধারে অস্থায়ী তাঁবুতে দিন কাটানো বাড়ি ফেরৎ পরিযায়ী শ্রমিক বিকাশ মাল বলেন, গ্রামের একাংশের আপত্তিতে স্কুল বাড়িতে আমাদের জায়গা হয়নি। বন্ধু বান্ধব আর পরিবারের লোকেদের তৈরী করে দেওয়া এই ছাওনীর নিচেই আমাদের দিন কাটছে।  পোকা- মাকড়, মশার উৎপাত আর এক প্রকার সাপেদের সঙ্গেই এখন কাটাতে হচ্ছে। একই সঙ্গে পানীয় জল ও আলোর কোন ব্যবস্থা নেই বলে তারা জানান।

    গ্রামবাসী গৌতম মাল বলেন, নিয়মানুযায়ী প্রশাসনের কাছে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরীর জন্য আবেদন করা হয়েছিল। একাংশের গ্রামবাসীদের আপত্তিতে তা সম্ভব হয়নি। যেখানে ওরা আছে সেখানে জল, আলোর কোন ব্যবস্থা নেই। এই ১৩ বাড়ি ফেরৎ পরিযায়ী শ্রমিককে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া কিম্বা নলকূপ থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করতে দেওয়া হচ্ছেনা তিনি দাবি করেন।

     অন্যদিকে গ্রামবাসী অনিকেত গোস্বামী, অপর্ণা মণ্ডলরা বলেন, একেবারে জনবহুল এলাকার মধ্যে এই প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলের নলকূপ, সামনের রাস্তা গ্রামের একটা বড় অংশের মানুষ ব্যবহার করেন। সামনের মাঠে শিশুরা খেলা করেন। মাত্র ক'জনের জন্য সিংহভাগ মানুষকে সমস্যায় পড়তে হবে। সেকারণেই তারা বিরোধীতা করেছেন বলে জানান।

   জগদল্লা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুশান্ত শীট বলেন, সরকারী কোন লিখিত নির্দেশ নেই। কিন্তু মানবিকতার খাতিরে গ্রামের স্কুলে রাখার কথা ভাবা হয়েছিল। একাংশের গ্রামবাসীদের বিরোধীতায় ঐ ১৩ জনকে সেখানে রাখা যায়নি। বাধ্য হয়েই জঙ্গল লাগোয়া মাঠেই রাখতে হয়েছে। সেরকম পরিস্থিতি  তৈরী হলে নিজে বাইরে থেকে ঐ পরিযায়ী শ্রমিকদের তার বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে বলে তিনি জানান।

 





Others News

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : তোপধ্বনি তে কেঁপে উঠল বিষ্ণুপুর । শুরু হল মল্ল রাজাদের ১০২৫ বছরের অষ্টমী পূজোর সন্ধিক্ষণ।

প্রাচীণ ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে আজও নিষ্ঠাভরে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে দেবী দুর্গা 'মৃন্ময়ী নামে পূজিতা হন। জানা গিয়েছে, পূর্ব প্রথা মতোই প্রাচীণ রীতি মেনে মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণে কামান দাগার মধ্য দিয়ে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে শুরু হয়ে গেল 'বড় ঠাকরুনে'র পুজো। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দর্শক সাধারণের উপস্থিতি ছিল বাঁধভাঙ্গা। সরকারী নিয়মকে মান্যতা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে দেবী বন্দনা। এমনকি এখানে কামান দাগার পর্বেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে অল্প সংখ্যক লোককে নিয়ে ঐ কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

শুরুর সময় থেকে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ ঘোষণা করা হয় বড় কামানের গর্জনের শব্দে। যার আওয়াজে রাজবাড়িতে আরতি নৃত্যও শুরু হয়ে যায়।